Jal Sankater Pratikare Amader Kartabya

জল সংকটের প্রতিকারে আমাদের কর্তব্য-বাংলা প্রবন্ধ রচনা | Jal Sankater Pratikare Amader Kartabya

Blinking Buttons WhatsApp Telegram

জলসংকটের প্রতিকারে আমাদের কর্তব্য (Jal Sankater Pratikare Amader Kartabya)


জলসংকটের প্রতিকারে আমাদের কর্তব্য (Jal Sankater Pratikare Amader Kartabya) বাংলা প্রবন্ধ রচনাঃ আজকের প্রতিবেদনে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের জন্য বাংলা প্রবন্ধ রচনা (Bangla Probondho Rochona) ” জলসংকটের প্রতিকারে আমাদের কর্তব্য ” দেওয়া হলো। ছাত্রছাত্রীদের বাংলা বিষয়ের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য এই রচনাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা। তাই ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার জন্য এই রচনাটি আজকের প্রতিবেদনে দেওয়া হল। ছাত্রছাত্রীরা তাদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য এই রচনাটি দেখে নিতে পারো।

রচনা সূত্রঃ ভূমিকা-দৈনন্দিন জীবনে জলের প্রয়োজনীয়তা -জলদূষণ ও জলের অপচয় জল সংরক্ষণ-আমাদের কর্তব্য-উপসংহার।

ভূমিকা:

এ কথা সকলেরই জানা, জলের অপর নাম জীবন। আমাদের পৃথিবীর মাত্র একভাগ স্থল এবং তিন ভাগ জল। তবে এই সুবিশাল জলরাশির ৯৭.২%-ই লবণাক্ত। অর্থাৎ, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় জলের মোট পরিমাণ মাত্র ২.৮%। প্রতিটি জীবদেহের ২/৩ অংশ জল দ্বারা নির্মিত। জল ছাড়া জীবজগতের জীবনধারণ অসম্ভব। জলের আপেক্ষিক তাপ এবং দ্রাব্যতা বেশি বলে, জীবদেহের যে-কোনো শারীরিক কার্যাবলির জন্য জল অত্যাবশ্যক। আমরা সাধারণত ভূগর্ভস্থ এবং ভূপৃষ্ঠস্থ জলকেই আমাদের দৈনন্দিন গৃহস্থালি ও অন্যান্য কাজে ব্যবহার করে থাকি।

দৈনন্দিন জীবনে জলের প্রয়োজনীয়তা:

জল ছাড়া আমাদের জীবন অচল। তৃষ্ণানিবারণ থেকে শুরু করে রান্না করা, কাপড় কাচা, বাসন মাজা, চাষাবাদ কোথায় নেই জলের ব্যবহার। কলকারখানায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য, অগ্নিনির্বাপণের জন্য, বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্যও প্রচুর পরিমাণে জল প্রয়োজন হয়। যাতায়াতের জন্য জলপথ ব্যবহার অগের তুলনায় অনেক কমে গেলেও এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, এক সময় এই জলের স্রোত ধরেই মানুষ স্থান থেকে স্থানান্তরে গেছে, তাদের ব্যাবসাবাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়েছে।

আরও দেখুন:  মাধ্যমিক ইতিহাস (পঞ্চম অধ্যায়) প্রশ্ম-উত্তর | Madhyamik History Chapter 5 Question Answer

জলদূষণ ও জলের অপচয়:

প্রকৃতির এই অত্যাবশ্যকীয় সম্পদটি মানব সৃষ্ট এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ফলে ক্রমশ দূষিত হয়ে চলেছে। এই জলদূষণের পিছনে বেশ কিছু কারণ আছে, যথা-চাষের জমিতে অত্যধিক হারে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক, কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য, অম্লবৃষ্টি, আর্সেনিক ও ফ্লুওরাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি। এই জলদূষণের ফলে মানবদেহে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন রোগ। জলে ক্লোরিনের মাত্রা বেড়ে অ্যালার্জি, মূত্রথলির রোগ; ফুওরাইডের মাত্রা বেড়ে গিয়ে ফ্লুরোসিস; লোহা, সায়ানাইড, তামা প্রভৃতির পরিমাণ বেড়ে গিয়ে কলেরা, আন্ত্রিক প্রভৃতি পেটের রোগ এবং নানারকমের চর্মরোগ সৃষ্টি হচ্ছে। জল দূষিত হওয়ার ফলে মাটির – উর্বরতা ক্রমশ কমে যাচ্ছে এবং ভৌম জলে ক্ষারের পরিমাণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে কমে যাচ্ছে ফসলের গুণমান, স্বাদগত এমনকি উদ্ভিদের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াও পালটে যাচ্ছে।  অধিকন্তু জলের মাত্রাতিরিক্ত অপচয়ের ফলে ভূগর্ভস্থ জলস্তর – প্রতিদিন একটু একটু করে কমে যাচ্ছে।

জল সংরক্ষণঃ

জলদূষণ রোধ এবং জল সংরক্ষণ বর্তমানে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। এর জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা, ব্যক্তিগত ও প্রযুক্তিগত প্রচেষ্টা এবং উপযুক্ত প্রশাসনিক পদক্ষেপ। সবার আগে সমস্ত রকম দূষণের মাত্রা কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে। জল সম্পদের সীমিত ভান্ডারের কথা সর্বসাধারণকে বোঝাতে হবে ও অনর্থক জলের অপচয় রোধ করতে হবে। শুধু তাই নয়, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে দূষিত জলকে শোধন করে ব্যবহার করতে হবে। বৃষ্টির জলকে জমিয়ে রেখে ব্যবহার করতে হবে। শিশুকাল থেকেই সব প্রজন্মকে জলের উপযুক্ত ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। প্রয়োজন হলে আইন প্রণয়ন করে জলদূষণ রোধ এবং সংরক্ষণের কাজ করতে হবে।

আমাদের কর্তব্য:

আমরা এই পৃথিবীর অধিবাসী, পৃথিবীর যাবতীয় সম্পদ সবই আমাদের সুবিধার্থে নিয়োজিত। তাই পৃথিবীর সকল সম্পদ রক্ষার দায়িত্বও আমাদেরই পালন করতে হবে। জল সংরক্ষণের জন্য সবার আগে নিজেদেরকে সচেতন হতে হবে এবং বাকিদের সচেতন করে তুলতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন হলে পথনাটিকা করতে হবে বা অন্য কোনো উপায় অবলম্বন করতে হবে। আমরা নিজেরাই যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত জল বয়ে যাওয়া আটকাতে পারি, দায়িত্বসহ ব্যবহারের পর জলের কলের মুখটা বন্ধ করি, পরিমিত পরিমাণে জল ব্যবহার করি তাহলেও অনেকটাই জলের অপচয় বন্ধ করা যায়। তা ছাড়া ব্যবহারযোগ্য স্বাদু জলের উৎসগুলিকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে, অন্যদের এব্যাপারে উৎসাহী করতে হবে।

আরও দেখুন:  মাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায় অনলাইন মক টেস্ট | Madhyamik History Chapter 1 Online Test

উপসংহার:

এ কথা স্পষ্ট জনমানসকে সচেতন করে তুলতে না পারলে নিছক আইনের দোহাই দিয়ে কোনো সমস্যারই বাস্তবিক সমাধান হয় না। দূষণ রোধ এবং অপচয় রোধ করলে তবেই আমাদের ভবিষ্যৎ খানিকটা হলেও সিকিয়র্ড হয়ে থাকবে। জল ছাড়া জীবজগৎ এক মুহূর্তও বাঁচতে পারবে না, তাই এই শ্যামলী পৃথিবীর বুকে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য আমাদের প্রত্যেককে জলের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে হবে এবং জল সংরক্ষণের প্রতি ঐকান্তিকভাবে যত্নবান হতে হবে।

hand আমাদের পোষ্টের লেটেস্ট আপডেট পেতে আমাদের Whatsapp Channel জয়েন করুন এবং Telegram Channel জয়েন করুন।

WhatsApp Channel Follow
Telegram Channel Join Now
Facebook Page Follow

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

WhatsApp Telegram
Home
শিক্ষার খবর
প্রবন্ধ রচনা
মক টেস্ট