WB MP Exam Routine 2025

WB MP Exam Routine 2025 | মাধ্যমিক ২০২৫ পরীক্ষার রুটিন

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দশম শ্রেণীর সিলেবাস ২০২৪ | WBBSE Class 10 Syllabus 2024 Download

Bangla Prabandha Rochana

প্রযুক্তির আক্রমণে বিপর্যস্ত পরিবেশ: বাংলা প্রবন্ধ রচনা | Bangla Prabandha Rochana

প্রযুক্তির আক্রমণে বিপর্যস্ত পরিবেশঃ বাংলা প্রবন্ধ রচনা ( bangla prabandha rochana environment disrupted by technology)


রচনা সূত্র : ভূমিকা—প্রাগাধুনিক সময় পর্বে প্রযুক্তি ও পরিবেশ—আধুনিক সময়পর্বে প্রযুক্তি ও পরিবেশ-প্রযুক্তি ও পরিবেশের সুস্থ সহাবস্থান—উপসংহার।

■ ভূমিকা :


আধুনিক যুগ হল প্রযুক্তি ও যন্ত্রবিদ্যার যুগ। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর রাতে শুতে যাওয়া পর্যন্ত আমরা প্রত্যেকে যন্ত্রনির্ভর। এমনকি সুখনিদ্রা যাপনের ব্যাপারেও আমরা যন্ত্রনির্ভর। আসলে আমাদের সুখস্বাচ্ছন্দ্য এবং পরিশ্রম লাঘব করার জন্যই আবিষ্কৃত হয়েছে বিভিন্ন যন্ত্র এবং প্রযুক্তি। কিন্তু আমরা নিজেদের অজান্তেই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি সেই সমস্ত প্রযুক্তি এবং যন্ত্রের ওপর। অপরদিকে এই পৃথিবীর বুকে প্রাণশক্তির টিকে থাকার জন্য যার ভূমিকা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সে হল প্রকৃতি। একদিকে আমাদের সুস্থ পরিবেশ অন্যদিকে সুবিধাজনক প্রযুক্তি; একটি নেসেসিটি এবং অপরটি লাক্সারি—এই দুয়ের নিরন্তর দ্বন্দ্বই যেন একবিংশ শতাব্দীর রূঢ়তম সত্য।

আরও দেখুনঃ আধুনিক জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহারঃ বাংলা প্রবন্ধ রচনা | Bangla Prabandha rachana

■ প্রাগাধুনিক সময়পর্বে প্রযুক্তি ও পরিবেশ:

সভ্যতার আদি লগ্নে ছিল মানুষ এবং পরিবেশের একত্রে অবস্থান। অরণ্যবাসী মানুষ সহজ-সরলভাবে জীবনযাপন করত; প্রকৃতির দেওয়া ফল-মূল, ঝরনার জলে তারা ক্ষুধাতৃয়ার নিবারণ করত। তাদের জীবন ছিল প্রকৃতি লগ্ন, তাই প্রকৃতিও তাদের ভালোবাসত। কিন্তু কালক্রমে তারা নিজেদের শ্রম লাঘব করার জন্য আবিষ্কার করতে লাগল বিভিন্ন প্রযুক্তি। এর ফলে মানুষের জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হল, অতীতের পরিশ্রম অনেক কমে এল। তখনও অবশ্য পরিবেশ মানুষের বিপক্ষে এসে দাঁড়ায়নি। কিন্তু শিল্পবিপ্লবের পরে পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন শুরু হল। নিত্যনতুন যন্ত্র ও প্রযুক্তির আবিষ্কার এবং তার অবাধ ব্যবহারের ফলে মানুষ ক্রমশই প্রযুক্তির ওপর ব্যাপক হারে নির্ভরশীল হয়ে উঠতে শুরু করল

■ আধুনিক সময়পর্বে প্রযুক্তি ও পরিবেশ:

একবিংশ শতাব্দীর এই আধুনিক সময়পর্বটি হল প্রকৃত অর্থেই তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ইত্যাদি এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী। ইনটারনেট ছাড়া বর্তমানে আমাদের এক মুহূর্তও চলে না কিন্তু এই অতি প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগুলিই নীরব ঘাতক হয়ে তিলে তিলে ধ্বংস করে দিচ্ছে আমাদের পরিবেশকে, নানারকম সমস্যা তৈরি করছে আমাদের শরীরে। আসলে আমাদের নিত্যব্যবহার্য এই সমস্ত প্রযুক্তি তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গশক্তির ওপর নির্ভরশীল। আর এই তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গশক্তি আমাদের স্বাস্থ্য, জীববৈচিত্র্য এবং পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। এগুলির প্রকোপে বিলুপ্তি ঘটছে মৌমাছি, বাদুড়ের মতো নানা কীটপতঙ্গ এবং পাখির। ফলে পরিবেশের স্বাভাবিক খাদ্যশৃঙ্খল এবং জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একই সঙ্গে কমে যাচ্ছে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও উৎপাদন ক্ষমতাও।
এ ছাড়া রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ওষুধ ব্যবহারের ফলে ফসল উৎপাদনের হার অনেকাংশে বেড়ে গেলেও এর ফলে পরিবেশ এবং আমাদের স্বাস্থ্যের বিপুল পরিমাণে ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়াও আমাদের নিত্যব্যবহার্য এসি, ফ্রিজ প্রভৃতি থেকে নির্গত বিষাক্ত উপাদানও আমাদের পরিবেশের ক্ষতি করছে।

আরও দেখুনঃ ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ার ভালোমন্দঃ প্রবন্ধ রচনা | Internet and Social Media

■ প্রযুক্তি ও পরিবেশের সুস্থ সহাবস্থান :

বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে জীবন থেকে প্রযুক্তিকে সম্পূর্ণ বাদ দেওয়া যেমন অসম্ভব তেমনি তা সামাজিক প্রগতিরও পরিপন্থী। তাই প্রযুক্তির সুনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার করে এবং সচেতনভাবে কিছু নীতিনিয়ম মেনে চললে অনায়াসেই কিন্তু প্রযুক্তির এই কুফলগুলিকে অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। তাতে আমাদের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ দুই-ই উপকৃত হবে। মোবাইল ফোনের যথেচ্ছ ব্যবহারকে বন্ধ করে শুধু প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেই তা ব্যবহার করা, প্রচলিত মোবাইল টাওয়ারের পরিবর্তে Ground Wave Emergency Network (GWEN) প্রযুক্তি ব্যবহার করে Electromagnetic Radiation-এর হানিকারক প্রকোপ খানিকটা হলেও মন্দীভূত করা সম্ভব। টাওয়ার স্থাপনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিয়মাবলি মেনে চলাও অত্যন্ত জরুরি। এ ছাড়া কৃষি বা দৈনন্দিন জীবনে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈবসার ব্যবহার, এয়ারকন্ডিশনার বা ফ্রিজ থেকে যে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হয় তার বৈজ্ঞানিক সমাধান দ্রুত আবিষ্কৃত হওয়া আবশ্যক।

আরও দেখুনঃ বাংলা প্রবন্ধ: দেহের গঠনে ও মনের বিকাশে খেলাধুলার ভূমিকা | Bangla Probondho

উপসংহার :

পরিবেশ এবং নিজেদের স্বাস্থ্য সম্বন্ধে ভেবে প্রযুক্তির সুচিন্তিত ব্যবহার করলেই বহু সমস্যার সমাধান সম্ভব। তবে এর জন্য সবার আগে প্রয়োজন জনসচেতনতা এবং সদিচ্ছা। অন্যথায় এই বৈচিত্র্যময় সুন্দর পৃথিবীর শ্মশানে পরিণত হতে খুব বেশি সময় লাগবে না।

আমাদের পোষ্টের লেটেস্ট আপডেট পেতে আমাদের Whatsapp Channel জয়েন করুন এবং Telegram Channel জয়েন করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top